তুলসী পাতার গুনাগুন ও ব্যবহারে উপকারিতা রয়েছে ১৫টি
তুলসী গাছের নানা ঔষধি ব্যবহার রয়েছে। তুলসী একটি ঔষধি গাছ। আধুনিক চিকিৎসা আসার আগে মানুষ নির্ভর করতো ভেষজ ঔষুধ। তুলসী পাতাকে ভেষজ রানী বলা হয়ে থাকে। তুলসী পাতায় যে সকল পুষ্টি উপাদান রয়েছে আসুন তা জেনে নিই
তুলসী গাছের পাতায় রয়েছে ভিটামিন এ, সি এবং কে এর উৎস। আরো রয়েছ
- আয়রন
- ক্যালসিয়াম
- ফসফরাস
- ম্যাগনেসিয়াম
- পটাশিয়াম
- ফাইবার ও প্রোটিন
সর্দি,কাসি
সর্দি কাশি সারাতে তুলসী পাতা ব্যবহার হয়ে থাকে। অনেক আগে থেকে সর্দি-কাশিতে তুলসীপাতা ব্যবহার করে আসছে মানুষ। কারণ তুলসী পাতা রস সর্দি-কাশি সারাতে খুব দ্রুত সাহায্য করে থাকে। আগে যখন কোন ঔষধ ছিল না। তখন থেকে তুলসী পাতা সর্দি কাশি ভালো করার জন্য ব্যবহার করে থাকতেন। সর্দি কাশি সারাতে আমরা যেভাবে তুলসী পাতা ব্যবহার করতে পারি যেমন,
তুলসী পাতার রসের সাথে মধু ও আদার রস মিশিয়ে খাওয়ালে সর্দি কাশি দ্রুত নিরাময় করা যায়।
দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে
তুলসী পাতার মধ্যে আছে মাইক্রোরিয়াল ও এন্টিরিয়াল উপাদান, যা আমাদের দাঁতকে শক্ত করতে এবং মুখে দুর্গন্ধ মুক্ত রাখতে সাহায্য করে থাকে। তাই দাঁত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও সুস্থ সবল রাখতে তুলসী পাতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করে থাকে। তাই আমাদের সবার উচিত প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখা।
গলা ব্যথা দূর করে
গলা ব্যথার সমস্যা চিন্তা কিসের তুলসী পাতা ব্যবহার করুন গলা ব্যথা সেরে যাবে। কয়েকটি তুলসী পাতা পানির সঙ্গে ফুটিয়ে সে পানি দিয়ে গার্গল করলে ব্যথা সেরে যাবে। দিনে ২ থেকে ৩ বার তুলসীপাতা দিয়ে পানি ফুটিয়ে সে পানি দিয়ে গার্গল করলে খুব দ্রুত ফল পাবেন।
রক্ত পরিষ্কার
তুলসী পাতায় ইনফ্লুমেটরি নামক উপাদান রয়েছে যা রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে থাকে। তাই রক্ত পরিষ্কার করতে ও তুলসী পাতা অনেক গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
শ্বাসকষ্ট দূর করে
তুলসী পাতার গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে তারা শ্বাসকষ্ট দূর করতে তুলসী পাতা ব্যবহার করতে পারেন । কারণ শ্বাসকষ্টের সমস্যা কমাতেও তুলসী পাতা বেশ উপকারী।
ক্যান্সার প্রতিরোধ
তুলসী পাতায় আছে রেডিওপ্রটেকটিভ উপাদান যা টিউমারের কোষ গুলোকে মেরে ফেলে। তুলসী পাতায় আরও যেসব উপাদান রয়েছে সেগুলো হল
- মাইরেটিনাল
- লিউটিউলিন
- রোসমারিনেক এসিড এবং
- প্রপিজেনিন
এ সমস্ত উপাদান ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে।
ডায়াবেটিক দূর করতে
তুলসী পাতা এন্টি ডায়াবেটিক ঔষধের কাজ করে থাকে। তুলসী পাতায় থাকা স্যাপোনিন ও ফ্যাবোনয়েড ডায়াবেটিস রোধ করতে সাহায্য করে থাকে।
প্রতিদিন খাওয়ার আগে তুলসী পাতা খেলে রক্তের সুগারের মাত্রা কমবে। তুলসী পাতা ডায়াবেটিস এর ইনসুলিন উপাদানের কাজ করে থাকে। তাই যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা প্রতিদিন খালি পেটে তুলসী পাতা খেলে উপকার পাবেন।
ওজন কমাতে
সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, তুলসী পাতা দিয়ে তৈরি ক্যাপসুল প্রতিদিন একটি করে খেলে ওবেসিটি ও লিপিড প্রোফাইল নিয়ন্তন করা যায়। তবে বলে রাখা ভালো আপনারা যে কোন ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারপর খাবেন। তুলসী পাতা খেলে রক্তের সুগারের মাত্রা কমতে ও সাহায্য করে থাকে
কিডনি সমস্যা
যারা কিডনিতে পাথরের সমস্যায় ভুগছেন। তুলসী পাতায় কিছু উপাদান রয়েছে যা আপনার কিডনির পাথর ভাঙতে সাহায্য করে। তুলসী পাতা হালকা মুত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে থাকে। আপনার রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে। তুলসী পাতায় রয়েছে আ্যসিটিক অ্যাসিড যা পাথর ভেঙে ফেলতে সাহায্য করে এবং আপনার শরীর থেকে সেগুলো বের করে দেয়।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
তুলসী পাতায় আছে ইউজিলল নামক উপাদান যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে। এছাড়া ওর রক্তের কোলেস্ট্রলের মাত্রা ও কমায় এই উপাদান। প্রতিদিন খালি পেটে কয়েকটা তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে আসবে। তাই আমাদের সবার প্রতিদিন তিন থেকে চারটি তুলসী পতা খাওয়া উচিত।
হজম ক্ষমতা বাড়ায়
হজম সমস্যা বা গ্যাসের সমস্যার সমাধান থেকে রক্ষা করতে পারে তুলসী গাছের পাতা। প্রতিদিন তুলসী গাছের পাতার রস খেলে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। তুলসী পাতায় রয়েছে এনজাইম, যা আপনার পরিপাকতন্ত্রকে ভালো রাখে।
মানসিক চাপ কমায়
তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে মন শান্ত হয়। তুলসী পাতা নিদ্রাহীনতা, বিষন্নতা কমাতেও সাহায্য করে। তুলসী পাতা দিয়ে চা তৈরি করে পান করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
মাথা ব্যথা
ব্যথামাথাব্যথা কমাতে তুলসীর চা অনেক ভাল কাজ করে।
জ্বর সারাতে
এছাড়াও জ্বর সারতে তুলসী পাতা ব্যবহার হয়ে থাকে। আধা লিটার পানিতে এক মুঠো তুলসী পাতা এক চামচ দারচিনির গুঁড়া দিয়ে পানি যতক্ষণ অর্ধেক না হয় ততক্ষণ পানি ফোটাতে হবে। পানি অর্ধেক হয়ে গেলে সাথে কিছুটা মধু মিশাতে হবে। তিন ঘন্টা পর পর এক চুমুক করে এই মিশ্রণ পান করলে জ্বর এবং ঠান্ডা লাগা সমস্যা সেরে যাবে।
ত্বকের যত্নে
আমরা অনেকেই মনে করি তুলসী পাতা শুধু সর্দি-কাশির জন্য ব্যবহার করতে হয়। আমরা অনেকেই জানি না, ত্বকের যত্নেও তুলসীর গুণ কোন শেষ নেই। তুলসী পাতায় রয়েছে এন্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। তুলসী পাতায় আরো রয়েছে প্রচুর পরিমাণ এন্টি অক্সিজেন। এসব উপাদান আপনার ত্বকের টক্সিন বের করতে সাহায্য করে। ব্রণের সমস্যা দূর করে কারণ তুলসী পাতায় রয়েছে এন্টিব্যাকটেরিয়াল। যা আপনার ত্বকে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। সে কারণে ব্রণ দূর হতে খুব একটা বেশি সময় লাগে না। ত্বকে আমরা যেভাবে তুলসী পাতা ব্যবহার করতে পারি, তুলসী পাতার বেটে কিছুটা টক দই অল্প একটু মধু মিক্সড করে মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর মুখ ভালো করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। ত্বককে ভালো রাখতে ও ত্বকের জেল্লা ধরে রাখতে সাহায্য করবে তুলসী পাতা
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url