ভাতের মাড় ব্যবহারে ত্বক হবে দাগ মুক্ত ফর্সা

ভাতের মাড় আমাদের অনেকের কাছে এটি একটি পরিচিত নাম। ভাতের মাড় সাধারণত তিন ভাবে প্রস্তুত করা হয়ে থাকে। চালকে ফুটিয়ে রান্না করার সময় পরবর্তী সময় মাড় সংরক্ষণ করতে পারি। এছাড়াও চালকে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখে পরবর্তী সময়ে চাল গুলোকে ছেঁকে আমরা যে পানি পেয়ে যায় সেটিকেও আমরা ব্যবহার করতে পারি। কিংবা আপনি ভাত থেকে সংরক্ষণ কৃত মাড় ফার্মেন্টেটিক পদ্ধতিতে ও ব্যবহার করে দুই থেকে তিন দিন পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারেন। এই তিন ভাবে ভাতের মাড় আপনার সৌন্দর্যের চর্চার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যুগ যুগ ধরে সৌন্দর্য চর্চার জন্য ব্যবহার হয়ে আসছে ভাতের মাড়। কিভাবে ব্যবহার করবেন ভাতের মাড়? আসুন তা জেনে নেই

আমরা কিন্তু প্রতিদিন ভাত রান্না করে থাকি এবং ভাতের যে মাড় হয় সেটাকে আমরা ফেলে দিয়ে থাকি। কোরিয়ান বিউটি সিক্রেট হচ্ছে ভাতের মাড়। চালের তৈরি নাইট ক্রিম, কোরিয়ান মেয়েরা চাল এবং ভাত, ভাতের মাড় দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ফেসপ্যাক, ক্রিম ইত্যাদি তৈরি করে তারা সেগুলো ব্যবহার করে থাকে। আসুন জেনে নেই কোরিয়ান মেয়েরা কিভাবে ভাতের মাড় ব্যবহার করে থাকে।

পেজ সূচিপত্র: আপনি যেই অংশটি দেখতে চাচ্ছেন সেখানে ক্লিক করুন 

ত্বকের যত্নে ভাতের মাড় 

প্রথমে ভাত রান্না করার সময় যখন চাল ফুটে উঠবে তখন কিছুটা ভাত সহ মাড় তুলে নিতে হবে। ভাত থেকে মার আলাদা করে নিতে হবে। তারপর মার ঠান্ডা করে নিতে হবে। মার ঠান্ডা হয়ে গেলে মারের সঙ্গে দু চার ফোঁটা লেবুর রস আর একটু নারিকেল তেল মিশিয়ে নিতে হবে। এই মিশ্রণটি আমাদের ক্লিনজিং হিসেবে কাজ করবে। এই মিশ্রণটি দিনে দুইবার ব্যবহার করতে পারেন। গোসল করার সময় একবার এবং রাতে ঘুমানোর আগে একবার। ভাতের মাড়ির মিশ্রণ একটি কটন প্যাডের সাহায্যে পুরো মুখে লাগিয়ে নিতে হবে। ভাতের মাড়ের মিশ্রণটি পুরো মুখে লাগানোর পর ভালো করে হাত দিয়ে মাসাজ করতে হবে। কিছুক্ষণ মাসাজ করার পর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। এইভাবে করে মাত্র সাত দিন ব্যবহার করলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার ত্বকের পরিবর্তন। ভাতের মাড়ের মিশ্রণ দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করতে পারবেন ফ্রিজ ছাড়াই। আর যাদের মুখে লেবু স্যুট করে না তারা লেবুর পরিবর্তে গ্লিসালিন অথবা টমেটো রস ব্যবহার করতে পারেন।

ভাতের মাড়ের ফেসপ্যাক 

কোরিয়ান মেয়েরা যেভাবে ভাতের মাড় দিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়ে তারা তাদের রূপচর্চা করে থাকে।


প্রথমে আমরা মাড় থেকে যে ভাত আলাদা করে রেখেছিলাম সে ভাত গুলোকে শিলপাটায় বা ব্লেন্ডারের সাহায্যে অথবা একটি ছাঁকনির সাহায্যে ভাত গুলোকে পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। তারপর ভাতের পেস্ট এর সঙ্গে এক চামচ টক দই, এক চিমটি কস্তুরী হলুদের গুড়া, এক চা চামচ মুলতানি মাটি এসব উপকরণগুলো ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। যাদের ঘরে টক দই নেই তারা দইয়ের পরিবর্তে কাঁচা গরুর দুধ আর ২ থেকে ৪ ফোঁটা লেবুর রস দিলে হবে। আর মুলতানি মাটি না থাকলে এর পরিবর্তে আপনারা বেসন ব্যবহার করতে পারেন। ভাতের মাড়ের এই ফেসপ্যাকটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখার পর ভালো করে হাতের সাহায্যে মাসাজ করতে হবে। তারপর একটি কাপড়ের সাহায্যে ফেসপ্যাক তুলে ফেলতে হবে। তারপর ভালো করে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। মুখ ধোয়ার পর দেখবেন জাদু। ভাতের মারের এই ফেসপ্যাক ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বক হয়ে যাবে নরম তুলতুলে চকচকে।

 আপনার ত্বকে যেসব কাজ করবে  

  • বয়সের ছাপ দূর করতে সাহায্য করবে 
  • মুখ কে করবে টানটান 
  • রোদে পোড়া কালো দাগ 
  • মেস্তা দূর করতে সাহায্য করে 
  • বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করবে 
  • যেকোনো একজিমা বা ব্রণের দাগ দূর করতে 
  • তোকে করবে ন্যাচারালি ফর্সা  

আমরা তো কত টাকা খরচ করে ত্বকে প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা যে ভাতের মাড় আমরা আমাদের ত্বকে ব্যবহার করতে পারি। মাড় স্কিন টোনের ক্ষেত্রে খুব ভালো কার্যকারী ভূমিকা পালন করে থাকে। ভাতের মাড় কেমিক্যাল মুক্ত হওয়ার কারণে কোন ধরনের জটিলতা তৈরি করবে না আপনার স্কিনে। সূর্যের যে অতিবেগুনি রশ্মির ত্বকের যে সান্ টেন পড়ে যায় সেটাকে রিমুভ করতে সাহায্য করে থাকে ভাতের মাড়।এছাড়াও একজিমার কারণে যে কালো দাগ বা ব্রণের কারণে যে কালো দাগ এবং ক্ষত তৈরি হয়ে থাকে সেগুলো কিছুটা হলেও কমাতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে ভাতের মাড়।


আমরা এন্টি এজিং এর জন্য কত রকমের প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু নিয়মিত ভাবে ভাতের মাড় ব্যবহার করলে অ্যান্টি এজিং এর জন্য খুব ভালো কাজ করে থাকে। যেটি কিনা আমরা অনেকেই জানিনা।

ভাতের মাড়ের মধ্যে যে সকল পুষ্টি উপাদান থাকে 

  • ভিটামিন বি ই 
  • প্রোটিন 
  • এন্টিঅক্সিডেন্ট 
  • কোলাজেল
  • ক্যালসিয়াম 
  • জিংক
  • কপার 
  • ফসফরাস 
  • আআই
  • এছাড়াও বিভিন্ন খনিজ উপাদান রয়েছে।

কোলাজের আমাদের ত্বকের ইলাস্টিক সিটি বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। যেটি কিনা আমরা ভাতের মারে প্রচুর পরিমাণে পেয়ে থাকি।

 চুলের যত্নে ভাতের মাড়

  • চুলের যত্নেও আমরা ভাতের মাড় ব্যবহার করতে পারি যেভাবে,
  • চুলের যত্নে ও ব্যবহার করতে পারেন ভাতের মাড় ।প্রথমে ভাতের মাড়ের সঙ্গে একটা পুরো লেবুর রস মিশিয়ে নিতে হবে।
  • তারপর মিশ্রণটি ভালো করে পুরো চুলে লাগিয়ে নিতে হবে।
  • চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত লাগিয়ে নিতে হবে এই ভাতের মারের মিশ্রণ।
  • ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে হবে।

অন্য নিয়মেও ভাতের মাড় ব্যবহার করা যায়


  • চুলে শ্যাম্পু করার পর ঠান্ডা ভাতের মার চুলে লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করার পর ধুয়ে নিতে পারেন।
  • আবার এভাবে ব্যবহার করতে পারেন চুলে শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার দেওয়ার পর কন্ডিশনার থাকা অবস্থায় ভাতের মাড় দিয়ে ১০ মিনিট রেখে চুল ধুয়ে নিন।এভাবে আপনারা ফেলে দেওয়া ভাতের মাড় দিয়ে চুলের যত্ন নিতে পারেন। এভাবে ব্যবহারের ফলে আপনার চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url