বিটরুট খেলে স্বাস্থ্যের যে সকল উপকার পাবেন

বিটরুট আমাদের সবার কাছে এক পরিচিত সবজি। এটি সুস্বাস্থ্য এবং পুষ্টিকর উপাদান গুলির সমন্বয়ে গঠিত, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। বিটরুট সাধারণত লাল রঙের হয়ে থাকে, কিন্তু সাদা এবং হলুদ রঙের বিটরুট ও পাওয়া যায়।

 বিটরূটএর স্বাদ মিষ্টি এবং কাঁচা, রান্না করা বা সালাদের ব্যবহার করা যায়। আমাদের আজকের আর্টিকেলটি বিটরুট এর বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান এবং এর বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়ে।

পেট সুচিপত্র: বিটরুটের স্বাস্থ্য উপকারিতা গুলো হল

বিটরুটের পুষ্টি উপাদান

বিটরুট এর মধ্যে যে সকল পুষ্টি উপাদান রয়েছে সেগুলো হলঃ 

ভিটামিন সিঃ বিটরুট এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরকে বিভিন্ন ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। ‌

ফাইবারঃ বিটরুট হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং কোলেস্টেরল স্তর নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

পটাশিয়ামঃ বিটরুট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং স্নায়ু কার্যকারিতা উন্নত করে ।

ম্যাঙ্গানিজঃ বিটরুট হাড়ের স্বাস্থ্য ও বিপাকীয় কার্যকরিতার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।

ফোলেটঃ বিটরুট ডিএনএ সংশ্লেষণ এবং মেরামতের জন্য অপরিহার্য।



বিটরুট হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক 

বিটরুট হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। বিটরুটের মধ্যে রয়েছে নাইট্রেট যা রক্তবাহী ধমনীকে প্রশান্ত করে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। বিটরুট রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

শারীরিক কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে বিটরুট 

বিট রুটের মধ্যে রয়েছে নাইট্রেট উপাদান। বিট রোড শরীরে নাইট্রিক অক্সিডেন্ট উপাদান উপাদন করে, যা মাংসপেশির অক্সিজেন সরবরাহ উন্নত করে। শারীরিক কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে নিয়মিত বিটরুটের জুস খেতে পারেন।

হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে বিটরুট 

বিটরুট হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে। বিটরুট এ রয়েছে ফাইবার উপাদান যেটা কিনা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে। বিট রোড অংকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। নিয়মিত বিটরুট খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর হবে।

অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে 

বিটরুট রয়েছে উচ্চমাত্রায় আয়রন। যার রক্তের হিমোগ্লোবিন উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বিটরুট রক্তস্বল্পতা দূর করে। যাদের রক্তস্বল্পতা সমস্যা আছে তারা নিয়মিত বিটরুট খেতে পারেন। এছাড়া, বিটরুট মধ্যে আছে ভিটামিন সি। ভিটামিন সি আমাদের ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে।

বিটরুট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে 

বিটরুটের মধ্যে রয়েছে বিটালাইন উপাদান একটি শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধির বিরুদ্ধে লড়াই করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বিট রুট নিয়মিত খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়। 

বিটরুট মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে 

বিটরুট মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং মস্তিষ্কের কার্যকরী তা বাড়াতে সাহায্য করে। বিট রোড মানসিক এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত করে। 

ওজন নিয়ন্ত্রণে বিটরুট 

ওজন নিয়ন্ত্রণে বিটরুট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিটরুট ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অতিরিক্ত  খাবার প্রবণতা কমায়। বিটরুটে ক্যালোরি মাত্রা কম থাকার কারণে এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে। 

বিভিন্ন উপায়ে বিটরুটের ব্যবহার

বিটরুট বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে যেমন কাঁচা খাওয়া, বিটরুটের সালাদ, বিটরুটের জুস বানানো যায় আবার বিটরুট বিভিন্ন ভাবে রান্না করা যায়। নিচে বিটরুটের কয়েকটি রেসিপি দেওয়া হল: 

বিটরুটের সালাদ 

উপকরণ 

  1. ১ টি বিটরুট (কুচি করে কাটা) 
  2. ১ টি গাজর (কুচি করে কাটা) 
  3. ১ টি শসা (কুচি করে কাটা) 
  4. এক কাপ বাঁধাকপি (কুচি করে কাটা )
  5. ১/২ কাপ দই 
  6. লবণ স্বাদমতো 
  7. ৪/৫ কাঁচামরিচ (কুচি করে কাটা )
  8. এক টেবিল চামচ লেবুর রস 

প্রণালীঃ সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে বিটরুট এর সালাদ। এই সালাতটি খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টি গুনে ভরপুর।

বিটরুট এর জুস 

উপকরণঃ 

  1. ১ টি বিট রুট 
  2. ১ টি আপেল 
  3. ১ টি গাজর 
  4. ১/২ ইঞ্চি আদা
  5. বিট লবণ স্বাদমতো 

প্রণালীঃ সব উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে বিটরুটের জুস। বিটরুটের জুস শরীরকে সতেজ রাখতে এবং শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

বিটরুটের সুপ 

উপকরণঃ 

  1. একটা বিটরুট (কুচি করে কাটা) 
  2. একটা পেঁয়াজ (কুচি করে কাটা) 
  3. একটা গাজর (কুচি করে কাটা) 
  4. চিকেন স্টক চার কাপ 
  5. লবণ ও মরিচ স্বাদমতো
  6. এক চা চামচ লেবুর রস

 প্রণালীঃ প্রথমে চিকেন স্ট্রোকের মধ্যে সব উপকরণ দিয়ে সিদ্ধ করে নিতে হবে। সিদ্ধ করা হয়ে গেলে সবজি গুলোকে আপনি ব্লেন্ড করেও নিতে পারেন আবার এমনিতেও খেতে পারেন।

 আমাদের শেষ কথা

বিটরুট একটি পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর সবজি। বিটরুট হৃদরোগ প্রতিরোধ, শারীরিক কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি, হজম প্রক্রিয়া উন্নত, অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ, ক্যান্সার প্রতিরোধ, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত, ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। নিয়মিত বিটরুট আমাদের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই আমাদের খাদ্য তালিকায় বিদ্যুৎ অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url