পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া-১০টি উপায়
পেজ সূচিপত্র: আপনি যেই অংশটি দেখতে চাচ্ছেন তার উপরে ক্লিক করুন
- পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া ১০টি উপায়
- কি খেলে পিরিয়ডের ব্যথা কমবে
- পিরিয়ডের ব্যথা বেশি কেন হয়
- পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঔষধ
- পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ব্যায়াম
- পিরিয়ডের ব্যথা হলে কি বাচ্চা হয় না
- পিরিয়ডের ব্যথা হলে মেয়েদের কেমন লাগে
- লেখক এর শেষ কথা
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া ১০টি উপায়
১. গরম পানির সেঁক
২. আদা চা
৩. ফেনেল বীজ
৪. মধু এবং দারুচিনি চা
৫. ক্যামোমাইল চা
৬. ব্যায়াম
পিরিয়ডের সময় হালকা ব্যায়াম করা শরীরে এন্ডরফিন নামক হরমোনের নিঃসরণ বাড়ায়। এন্ডরফিন হলো একটি প্রাকৃতিক ব্যথা উপশমকারী যা শরীরের যেকোনো ধরনের ব্যথা হ্রাস করতে কার্যকর। হালকা যোগব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
কিছু সহজ ব্যায়াম:
- বাটারফ্লাই পোজ: মেঝেতে বসে দুই পায়ের তালু একসাথে জোড়া লাগিয়ে, হাঁটু দুটো দুই দিকে ছড়িয়ে দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে হবে।
- বালাসনা (চাইল্ড পোজ): হাঁটু ভাঁজ করে বসুন, তারপর ধীরে ধীরে সামনের দিকে ঝুঁকে হাত দুটি সামনে প্রসারিত করে রাখুন। এতে কোমর ও পেটের পেশি শিথিল হয়।
৭. সুষম খাদ্যগ্রহণ
তিলের তেলে ম্যাগনেসিয়াম ও জিঙ্ক রয়েছে যা পেশি শিথিল করতে সাহায্য করে
এবং পিরিয়ডের ব্যথা কমায়। তিলের তেল হালকা গরম করে পেটের নিম্নাংশে ম্যাসাজ
করলে তা জরায়ুর পেশিগুলোকে শিথিল করতে সাহায্য করে এবং রক্তসঞ্চালন বাড়িয়ে
ব্যথা উপশমে সহায়ক হয়।
৯. পুদিনা পাতা
পুদিনা পাতা একটি প্রাকৃতিক ব্যথানাশক হিসাবে কাজ করে। পুদিনা পাতা দিয়ে
তৈরি চা পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে কার্যকর হতে পারে। পুদিনা পাতার চা তৈরি করতে
এক কাপ গরম পানিতে কয়েকটি পুদিনা পাতা ফোটাতে হবে। এরপর ছেঁকে নিয়ে দিনে
২-৩ বার পান করতে হবে।
১০. তিলের বীজ
তিলের বীজের ম্যাগনেসিয়াম ও জিঙ্ক সমৃদ্ধ গুণাবলী রয়েছে যা পিরিয়ডের
ব্যথা কমাতে সহায়ক। প্রতিদিন কিছু তিলের বীজ চিবিয়ে খেলে বা তিলের বীজ
মিশিয়ে রুটি, পরোটা ইত্যাদির সাথে খেলে পিরিয়ডের ব্যথা হ্রাস পেতে
পারে।
১১. নিয়মিত মেডিটেশন
মেডিটেশন বা ধ্যানের মাধ্যমে মনকে শান্ত রাখা সম্ভব, যা পিরিয়ডের সময়ের
মানসিক চাপ এবং দুশ্চিন্তা কমিয়ে দেয়। নিয়মিত মেডিটেশন করলে শরীরের
আভ্যন্তরীণ ভারসাম্য রক্ষা হয়, যা পিরিয়ডের সময় ব্যথা কমাতে সাহায্য
করে।
১২. পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম
পিরিয়ডের সময় পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের
পুরোপুরি বিশ্রাম না পেলে ব্যথা বেড়ে যেতে পারে। ঘুম শরীরকে পুনরুজ্জীবিত
করে এবং ব্যথা কমাতে সহায়ক হয়। প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত, এবং
প্রয়োজন অনুযায়ী বিশ্রাম নেওয়া উচিত।১৩. পানীয় ও জল গ্রহণ
১৪. এপসম সল্ট স্নান
১৫. তাজা ফল ও শাকসবজি
১৬. সুগন্ধযুক্ত তেল
সুগন্ধযুক্ত তেল যেমন ল্যাভেন্ডার বা রোজমেরি তেল ব্যথা কমাতে সহায়ক। এগুলো অ্যান্টি-ইনফ্ল
কি খেলে পিরিয়ডের ব্যথা কমবে
১. ফল এবং শাকসবজি
ফল এবং শাকসবজিতে প্রচুর ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং পিরিয়ডের সময় ব্যথা উপশম করে।
- ফল: আপেল, কলা, পেয়ারা, বেরি, এবং আঙুর
- শাকসবজি: ব্রকলি, পালং শাক, কুমড়ো, গাজর
বিশেষত ব্রকলিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা পেশি শিথিল করতে সহায়ক।
আরো পড়ুনঃ সিম্পল মেহেদি ডিজাইন ২০২৫
২. ফ্যাটি ফিশ (Omega-3 ফ্যাটি অ্যাসিড)
৩. বাদাম এবং বীজ
বাদাম এবং বীজে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা পেশি শিথিল করতে এবং ব্যথা কমাতে সহায়ক।
- বাদাম: আখরোট, কাজু, আমন্ড
- বীজ: তিল, চিয়া বীজ, সূর্যমুখী বীজ
৪. ডার্ক চকলেট
৫. আদা এবং হলুদ
৬. তিলের বীজ
৭. পানি ও হাইড্রেটিং পানীয়
৮. দই এবং অন্যান্য ফারমেন্টেড খাবার
৯. পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার
১০. চা (হারবাল চা)
এড়িয়ে চলার খাবার:
-
ক্যাফেইন: ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় (কফি, চা) শরীরে পানিশূন্যতা সৃষ্টি করতে পারে এবং পিরিয়ডের ব্যথা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
- প্রক্রিয়াজাত খাবার: উচ্চমাত্রার লবণ ও চিনি সমৃদ্ধ প্রক্রিয়াজাত খাবার শরীরের প্রদাহ বাড়িয়ে দেয় এবং ব্যথা বাড়াতে পারে।
- অ্যালকোহল: এটি শরীরের পানিশূন্যতা সৃষ্টি করে এবং পিরিয়ডের সময় ব্যথা বাড়ায়।
পিরিয়ডের ব্যথা বেশি কেন হয়
১. প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের উচ্চ মাত্রা
প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন একটি প্রাকৃতিক হরমোন যা জরায়ু সংকোচনের নিয়ন্ত্রণ করে। যদি প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের মাত্রা বেশি হয়, তাহলে জরায়ুর সংকোচনও বেশি হয়, ফলে ব্যথা তীব্র হয়ে ওঠে।২. এন্ডোমেট্রিওসিস (Endometriosis)
এটি একটি অবস্থা যেখানে জরায়ুর অভ্যন্তরীণ পর্দা জরায়ুর বাইরে বৃদ্ধি পায়। এই অবস্থায় তীব্র পিরিয়ডের ব্যথা হতে পারে এবং এটি সন্তান ধারণের ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি করতে পারে।৩. ফাইব্রয়েডস (Fibroids)
জরায়ুতে ছোট টিউমারের মতো গঠন (ফাইব্রয়েড) থাকলে পিরিয়ডের সময় ব্যথা বাড়তে পারে। এটি জরায়ুর অভ্যন্তরে বা বাহিরে যে কোনো স্থানে হতে পারে।৪. পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ (PID)
পেলভিক অঞ্চলে সংক্রমণ থাকলে পিরিয়ডের সময় তীব্র ব্যথা হতে পারে। PID সাধারণত যৌনবাহিত রোগের (STDs) কারণে হয়ে থাকে।৫. অ্যাডেনোমায়োসিস (Adenomyosis)
এই অবস্থায় জরায়ুর পর্দা পেশির গভীরে প্রবেশ করে এবং এর ফলে পিরিয়ডের সময় ব্যথা বাড়তে পারে।৬. ইন্ট্রাউটেরাইন ডিভাইস (IUD)
জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহৃত কিছু ডিভাইস যেমন IUD পিরিয়ডের সময় ব্যথা বাড়াতে পারে, বিশেষ করে পিরিয়ডের প্রথম কয়েক মাসের মধ্যে।৭. বয়স ও হরমোন পরিবর্তন
টিনএজার বা কম বয়সী মেয়েদের মধ্যে প্রায়ই পিরিয়ডের সময় তীব্র ব্যথা হয়, কারণ তাদের হরমোনের পরিবর্তন বেশি হয় এবং শরীর নতুন অবস্থার সাথে মানিয়ে নিতে সময় নেয়।পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঔষধ
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত ওষুধগুলি ব্যবহার করা হয়:
১. ইবুপ্রোফেন (Ibuprofen)
- এটি একটি নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগ (NSAID) যা প্রদাহ কমিয়ে ব্যথা প্রশমিত করে।
- প্রচলিত ব্র্যান্ড: Advil, Motrin
২. ন্যাপ্রক্সেন (Naproxen)
- এটিও একটি NSAID যা পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে সহায়ক।
- প্রচলিত ব্র্যান্ড: Aleve, Naprosyn
৩. মেফেনামিক অ্যাসিড (Mefenamic Acid)
- এটি প্রধানত পিরিয়ডের ব্যথা নিরাময়ে ব্যবহৃত হয় এবং NSAID হিসেবে কাজ করে।
- প্রচলিত ব্র্যান্ড: Ponstel, Meftal
৪. অ্যাসিটামিনোফেন (Acetaminophen)
- এটি ব্যথা কমাতে সাহায্য করে, তবে এটি প্রদাহ কমায় না।
- প্রচলিত ব্র্যান্ড: Tylenol, Paracetamol
৫. অ্যান্টিস্পাসমোডিক ওষুধ (Antispasmodic Drugs)
যেমন Drotaverine (Drotin) এবং Hyoscine (Buscopan) পেশি শিথিল করে এবং জরায়ুর সংকোচন কমিয়ে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।এই ওষুধগুলো সাধারণত ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করা উচিত, কারণ দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহার বা অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণের ফলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url